ব্যাকগ্রাউন্ড

ফেইসবুকে!

চুপকথার টুকিটাকি


ব্লগের ম্যাসেজ অপশানে কখনো যাওয়া হয় না। হঠাৎ কি মনে করে সেদিন সকালে ঢুকলাম। একটি হাই দিলাম জনতার উদ্দেশ্যে, কারো কোন সাড়া শব্দ পেলাম না। বেরিয়ে পড়ব এমন সময় একটি টেক্সট ভেসে উঠলো, খুব গুণী একজন ব্লগারের। 

-হ্যালো

-কেমন আছেন?

-অনেক ব্যস্ততার ভেতর আছি, ব্লগে আসার কথা ভাবতেই পারি না। আপনি কেমন আছেন,  আয়না এখনো আছে না হারিয়ে গেছে?  

- আর বলবেন না আমিও প্রচণ্ড ব্যস্ততায় আছি। দৈনন্দিন অনেক কাজই ছেড়ে দিয়েছি, যেমন ধরুন ভাত তরকারি পৃথক ভাবে রান্না করতে সময় লাগে বিধায়, সব একত্র করে খিচুড়ি রান্না করি প্রতিদিনচিরুনিটা জানালা দিয়ে ফেলে দিয়েছি, এটাও অনেক সময় নেয়। চিন্তা করছি টুথ ব্রাশটাও ফেলে দিবো।  

- যদি কিছু মনে না করেন আপনার বয়সটা জানতে পারি।

- দেখুন এভাবে কারো বয়স জানতে চাওয়া কি ঠিক!

-আসলে আমি ডাক্তার মানুষতো, নামের পরেই সেক্স আর এজ এর প্রশ্ন চলে আসে। আপনি কিছু মনে করবেন না।

- না আমি কিছু মনে করি নি। রোগী মানুষতো বলতে বলতে অভ্যস্ত। তবে আপাতত কোন রোগ নেই, রোগ হলে বলব।

 

আমার নাম্বারটা রাখুন বলে কেটে পড়লাম ম্যাসেজ অপশান থেকে। মনে মনে ভাবছি ব্লগারকে  কোনো আঘাত না করেই চলে আসলাম! কাউকে আঘাত না দিয়ে আমি একদম থাকতে পারি না। ফিল্মে অভিনয় করলে খল চরিত্রগুলোতেই আমাকে নেয়া হোতো, আমি ভালোও করতাম। স্বপ্নেও আমি মানুষকে খোঁচা মারতে অভ্যস্ত। সেদিন হেমিংওয়েকে স্বপ্নে দেখেও চুপ থাকতে  পারলাম না, বলেই দিলাম সাহিত্যে কিছু ফাউ নোবেলের মধ্যে আপনারটাকে এক নাম্বারে রাখতে   হয়। একথা শুনে বার্নাড শ পাশ কাটিয়ে স্তিফেন হকিং এর কানে কানে কি যেন বলে পালিয়ে গেলো। পরে জানলাম বারনাড শ হকিংকে বলছিল, ‘ওল্ড ম্যান এন্ড দ্য সি’কে এ মানুষটি ফালতু  উপন্যাস বলেছে, তোমার সর্বাধিক বিকৃত এবং সবচেয়ে কম পঠিত ‘এ ব্রিফ হিস্টরি অব  টাইম’কে আবার কী বলে, ভালোয় ভালোয় কেটে পড়। আমি মনে মনে বলি, আরে আমার কথা শ’ই বলে দিল। যাক স্বপ্নের কথা বেশী বলতে নেই।     

 

আজ সকালে ঘুম ভাংলো সেই গুণী ব্লগারের ফোনে।   

- হ্যালো কেমন আছেন  

- বেশতো, কেটে যাচ্ছে

হঠাৎ নীরবতা, আমার কণ্ঠ শোনার পর তার কেমন মনে হয়েছে জানি না, আমার কথার উপর আমার মারাত্মক আত্মবিশ্বাস। কেউ শুনলে আলাপ জমাতে চাইবেই, কিন্তু ব্লগার মানুষ তাঁদের প্রতিদিন অনেক সুন্দর সুন্দর কথার ফোন আসে।   

- আজতো ছুটির দিন আসুন না শাহাবাগ কিংবা অন্য কোথাও।

 আমার তেমন কোন কাজ ছিল না, রাজী হয়ে গেলাম।  

 

রমনা পার্কের সামনে একটি লোক দাঁড়িয়ে আছে হাতে একটি সাদা গোলাপ। পাঞ্জাবি পরা, চোখে সোনালী ফ্রেমের চশমা, বারবার ঘড়ি দেখছে আমি ভাবলাম এটাই আমার সেই কাঙ্ক্ষিত গুণী  ব্লগার, আমার সঙ্গে দেখা  করার জন্য মাঞ্জা মেরে এসেছে। ফোনটি হাতেই ছিল রিং দিতেই টি  শার্ট পরা একজন মাঝবয়সী লোকের ফোন বেজে উঠলো। লোকটি আমার দিকে তাকিয়ে হাসলো, আমিও হাসলাম। তারপর দু’জনে মিলে রমনার ভেতরের দিকে একটি বেঞ্চিতে গিয়ে  বসলাম। সূর্যের নরম আলোয় লোকটাকে মন্দ লাগছিল না। বসার সময় টের পেলাম হাতে একটি কবিতার বইমনে মনে ঢোক গিললাম না জানি কোন দুর্ঘটনা ঘটে যায়। এ অখাদ্য কি আমার খেতে হবে? যেই আশংকা সেই ঘটনা  মিষ্টি হেসে আমার দিকে কবিতার বইটি বাড়িয়ে দিয়ে বলল নিন আপনার জন্য। মনে মনে বলি মাফ করা যায় না, তবু মুখে কৃত্রিম একটি হাসি ফুটিয়ে বললাম, ওহ! ধন্যবাদ-ধন্যবাদ, ইউ আর সো নাইস! এভাবে এ কথা ও কথা দশ কথা হচ্ছিল। দু’জন মানুষের প্রথম দেখায় যা হয় আর কি। 

 

এক জন বাদামওয়ালা যাচ্ছিল সামনে দিয়ে। আমি ১০ টাকার বাদাম কিনে গুণী ব্লগারের হাতে পাঁচ টাকার বাদাম এবং নিজে পাঁচ টাকার বাদাম রাখলাম।  তারপর দেখি আমার সঙ্গী ব্লগার  বাদামগুলো ঠোঙ্গায় রেখে খোসাগুলি চিবুচ্ছে। আমি মনে মনে ভাবি বড় মানুষেরা একটু উল্টা পাল্টাই হয় বুঝি!     

ছবি
সেকশনঃ সাধারণ পোস্ট
লিখেছেনঃ চুপকথা তারিখঃ 30/08/2013
সর্বমোট 23408 বার পঠিত
ফেসবুকের মাধ্যমে কমেন্ট করুণ

সার্চ

সর্বোচ্চ মন্তব্যকৃত

এই তালিকায় একজন লেখকের সর্বোচ্চ ২ টি ও গত ৩ মাসের লেখা দেখানো হয়েছে। সব সময়ের সেরাগুলো দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

এই তালিকায় একজন লেখকের সর্বোচ্চ ২ টি ও গত ৩ মাসের লেখা দেখানো হয়েছে। সব সময়ের সেরাগুলো দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন