জীবনের পথে একটা সময় কাটিয়ে এসেছি,
একটি সাইকেল কেনার জন্য দিনের পর দিন কান্না করেছি,
তখন, শয়নে স্বপনে চোখে শুধু সাইকেলই ভাসতো।
রাতে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখতাম সাইকেল চড়ে এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছি।
নাওয়া খাওয়া ছেড়েও দিয়েছিলাম একটি সাইকেলের আবদার পূরণ করার জন্য।
একেবারে অনশনব্রত যাকে বলে।
কিন্তু সবার সাফ সাফ কথা, কোনো সাইকেল ফাইকেল কিনে দেয়া হবে না।
কিন্তু আমার প্রতিদিনের কান্না আর একরোখা দাবী কিছুতেই দমাতে পারছিলেন না বাড়ির কেউ।
বহু অশ্রু ঝড়ানো কান্নার পর আম্মা বললেন,
সাইকেল কিনে দেয়া হবে, তবে শর্ত হচ্ছে
আগে পরীক্ষায় পাশ করতে হবে।
বুকে চাপা কষ্ট নিয়ে মেনে নিলাম শর্ত।
সাইকেলের টানে আমার সেকি পড়ার বাহার!
অবশেষে পরীক্ষা দিলাম,
পাশও করলাম করলাম, পরের ক্লাসে উঠে গেলাম।
কিন্তু সাইকেল আর কিনে দেয়া হয় না।
অন্যের সাইকেল দেখলেই কলিজা ফেটে ফেটে যায়,
এ যেন মনের জমিনে এক খন্ড বাপ্পারাজের বেদনা।
এভাবে সাইকেল নামের মুলা সামনে ধরিয়ে রেখে সিক্স-সেভেন- এইট পার করে ফেললাম।
কিন্তু আশাটা আর পূরণ হলো না।
অথচ এখন তো চাইলেই মাসে দু একটা সাইকেল কেনা যায়।
কিন্তু ইচ্ছেটা যে আর সাইকেলে সীমাবদ্ধ নেই, সেই স্বপ্নটা যে আর বেঁচে নেই ।
বুঝতে শিখেছি,
মানুষের বয়স আর সক্ষমতার সাথে তার স্বপ্নেরাও বড় হয়।
তবে স্বপ্ন আর সক্ষমতার মাঝে ব্যবধান কিছু চিরকালই থাকে,
এ ব্যবধানের জন্য যদি স্বপ্ন দেখাটাই থেমে যায়,
তবে সক্ষমতা সৃষ্টি হবে কিভাবে?
তাই স্বপ্ন এখন বড় করেছি,
আজ স্বপ্ন দেখি নিজের একটা বিলাসবহুল গাড়ি হবে।
কে জানে?
হয়তো একদিন ইচ্ছে করলেই সাইকেলের মতোই মাসে কয়েকটা কিনে ফেলার সক্ষমতা তৈরী হয়েও তো যেতে পারে।
তখন হয়তো গাড়ি নেয়ার সেই ইচ্ছেটাও থাকবে না,
হয়তো ব্যক্তিগত হ্যালিকপ্টার কিংবা বিমান নেয়ার স্বপ্ন এসে ভড় করতে পারে মস্তিষ্কে।
হয়েও তো যেতে পারে!