ব্যাকগ্রাউন্ড

ফেইসবুকে!

পরিচয়

পরিচয় মোঃ এনামুল হক পর্ব ২ ************************************************* সুমাইয়্যা আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরলো সন্ধ্যায়। বাসায় এসে আরমান সাহেবকে বলল বাবা ভাইয়্যা আমাদের কলেজের পার্কের সামনে বসে চটপটি বিক্রি করে কেন? দুনিয়াতে আর কোন জায়গা নেই। তাতে হয়েছে কি? যেখানে লোকজন থাকবে সেখানে বিক্রি করবে। মানুষের কাছে পরিচয় দেব সে আমার ভাই। সমস্যা কোথায়? ভাইতো ভাই। পরিচয়ে লজ্জা কোথায়? লেখাপড়া শেষ করে কেউ চটপটি বিক্রি করে। ভাল চাকরী খুঁজতে পারে না। তবউও লোকজনকে কিছু বলা যায়। স্বাধীনভাবে কাজ করছে। তাতে সমস্যা কোথায় ? ওকে বলো অন্য কোথাও গিয়ে বিক্রি করতে। আজ মনে হয় দেখা হয়েছে। হ্যাঁ। বুঝতে পেরেছি। তোমার কাজ তুমি করো। ওর কাজ ও করবে। ঠিক আছে। সুমাইয়্যা অন্য রুমে চলে গেলো। বই বের করে পড়তে বসলো। রিমি তার বাবাকে বলল আমি কারো কাছে পরিচয় লুকুই না বাবা। আমার যা সত্য তাই বলে দেই। এটাই বাস্তব মা। যাও পড়তে বসো। যে ছেলে পড়া শেষ করে চটপটি নিয়ে বের হয় তার কাজ করতে কোন সমস্যা হয় না। অতচ যাদের জন্য কাজ করছে তারা তার পরিচয় দিতে কার্পন্য করে। সারাজীবনের সাধনার ফল তিনি পেয়েছেন বলে মনে করেন। তিনি কৎনো ভাবতে পারেন নি যে সে এমন কাজ করবে। সমাজে সে তার পরিচয় অন্যভাবে ধরবে।কাজকে আমার মেয়ে অবমূল্যায়ন করছে। যে কাজকে সম্মান করে না সে কখনো বড় হতে পারে না। সজল এখনো বাহিরে রয়েছে। প্রতিদিন তার দোকানে অনেক কাষ্টমার আসে। ইদানিং লক্ষ্য করছে একটি মেয়ে প্রতিদিন তার দোকানে আসে তার বান্ধবীদের নিয়ে। কিছুসময় বসে তারপর খেয়ে চলে যায়। আর তাকে ফলো করে। দোকানের ছেলেকে রেখে সে অন্যদোকানে যায়। তাদের সাথে কথা বলে। কি খবর রহিম ভাই? ভাল। তোমার খবর কি? ভাল। তোমার লেখাপড়া আছে। অন্য কিছু করতে। করবো। একটা উদ্যেগ নিচ্ছি। কি করবে? ভাবছি একটা দোকান খুলবো। চটপটির। দোকানে চটপটি সহ চা কফির ব্যবস্থা করবো। ভাল চিন্তাভাবনা করেছো। সমস্যা হলে বলো আমিও তোমাকে সহযোগিতা করবো। বলবো। আর কত ভ্যান চালিয়ে এভাবে চলবে। একটা স্থায়ীকরা দরকার। তা দোকান দেখেছো। খুঁজতেছি ভাই পাচ্ছি না। এদিকে হলে ভাল হতো। আমিও দেখছি তোমার জন্য। দেখি কি করা যায়? দেখো। আমি আসি। পরে কথা হবে। মাল শেষ হয়ে গিয়েছে। চলে যাবো। আমারো শেষ চলো রওয়ানা হই। সবকিছুপরিষ্কার করে বাসার দিকে রওয়ানা হলেন। সজল বাসায় পৌছে গাড়ি থেকে সব নামালো। রিমি ঘুমায় না। যতক্ষণ সজল বাসায় ফিরছে। সজল বাসায় ফেরার পর তার থালাবাসন ধোয় তারপর দুজনে একসাথে বসে খাওয়া দাওয়া করে। সজল বলল এখনো ঘুমাস নি। তোমাকে রেখে কখনো খেয়েছি। মাঝে মাঝে। বুঝইতো বয়স হয়েছে ঘুম চলে আসে। বয়স হয়েছে। না। চুল ধরে টান দিলো। মা মা। ছাগলের বাচ্ছার মতো ম্যা ম্যা করছিস কেন? কি হলো? আবার দুজনে ঝগড়া শুরু করলি নাকি। আমি না তোমার ছেলে। তোর বউয়ের সব চুল আমি টেনে ছিড়বো। আমার বউ কেউ হবে নারে। চটপটি ওয়ালার বউ কেউ হতে চায় না। হবে দেখিস। চিন্তা করিস না। আমার ভাবী খুব সুন্দর হবে। দেখে নিস। কিরে শেষ হলো তোদের। হ্যাঁ মা হলো। আসছি। সজল ঘরে এসে মটর বিঝিয়ে রাখলো, সাথে ডালও। রিমি বলল কিরে খাবি না।ক্ষিধে লেগেছে। এসে গেছি। বাবা খেয়েছন মা। হ্যাঁ। সুমাইয়্যা। খেয়েছে। দাও খাবার দাও। সবাই খাবার খেতে বসলো। তার বাবা আরমান বললেন সুমাইয়্যার সাথে তর দেখা হয়েছে। নাতো বাবা। মিথ্যে বলছিস কেন? আরে বাবা দেখা হয় নি। কেন কথা বাড়াচ্ছ। তুমি আর ঐ পার্কের সামনে চটপটি বিক্রি করতে যেও না। বাবা আমি কোথায়যাবো না যাবো আমার ব্যাপার। ব্যবসা করতে হবে বুঝতে পেরেছো। ঠিক আছে। কিন্তু তোমাদের ভাই বোনদের মাঝে কখনো ঝগড়া যেন না হয়। হবে না বাবা নিশ্চিত থাকো। না হলেই হলো। সজল আজ সকালে বের হয় নি। বন্ধুরা আজ বেড়াতে যাবে । বিকেলে বের হবে। তাই সকালে বের হয়েছে। কলেজে বসে ওরা গল্প করছে। কিরে হঠাৎ কি কাজে ডাকলি। এমনি অনেকদিন কলেজ ক্যাম্পাসে আসা হয় না। ভাবলাম বন্ুরা একসাথে মিলে আড্ডা দেই। তোর খবর কি? ব্যবসায় আছি । জানিসতো কি ব্যবসা করছি । হ্যাঁ। তা দোকান পেলি। এখনো পাই নি। তোরা সবাই মিলে দেখ না। দেখবো। রকিবের খবর কি? চাকরী খবর দেখতে দেখতে দিন শেষ। আর কত দেখবো। শফিক। আরে আমারও একই অবস্থা। বলতে গেলে সবার। বাবা ধমক দেয়।মা গালিগালাজ করে। করবেতো। বেকার বসে থাকলে সবাই কথা বলবে। কি করা যায় বলতো। শালার সার্টিফিকেট মনে হয় কলাপাতা। কাজের ইন্টারভিউ দিতে গেলে অভিজ্ঞতা আছে কিনা খুঁজ করে। রবিন বলল অভিজ্ঞতা হবে কি করে ? পড়াশুনা করতে করতে সময় পার। টিউশনি এখন আর ভাল লাগছে না। সজল বলল শালা টিউশনি করে হাঁটতে হাঁটতে জুতা ক্ষয় হবে মাগার টাকা উঠবে না। এজন্য এসব ছেড়ে দিয়ে বাবার চটপটির ব্যবসা ধরলাম।তোরাতো উদ্যেগতা হতে পারবি। কি করে? একেকজন একেকধরনের ব্যবসা খুলতে পারিস। চাকরীর পেছনে ছুটে সিভি, ছবি, আর কাগজ ফটোকপি করতে করতে যে টাকা খরচ হয় তাতে ছোটখাটো একটা বরযবসা করা যাবে। টাকা প্রয়োজন। টিউশনি থেকে টাকা জমাবি। খেয়ে চলে যায়। বাবা মাকে দিতে পারি না। মা আজো ঝাড়ু দিয়ে দৌড়িয়েছে। আচ্ছা আমরা সমবায় সমিতি করতে পারি না। পারি। টাকা জমিয়ে সুদের ব্যবসা করবো। রাতারাতি বড়লোক হতে পারবো। শালা সুদ কি জানিস ।? কি? নজিস চিনস। ওয়াক। আরো আছে। মানে। সুদ হলো এমন এক জিনিস যা মায়ের সাথে জিনা করার চেয়ে জগন্য। নাউযুবিল্লাহ মিন যালিক। ভাই মাফ চাই দোয়াও চাই। সুদের ব্যবসা করবো না। সুদে ঘর জ্বলে। নিজ স্ত্রী সন্তানের উপর তা পতিত হয়। ভাই ভয় লাগছে আর বলতে হবে না। আমরা অন্য কাজ করতে পারি। বল। সমবায় সমিতির মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন প্রকল্প করতে পারি। যেমন ধর আমার চটপটির ব্যবসা। এছাড়া তোরা যে কাজ জানিস। টিউশনি করিস। আমরা একটা স্কুল বা কোচিং সেন্টার খুলতে পারি। বড় পুকুর নিয়ে মৎস্য চাষ করতে পারি, হাঁস মুরগীর খামার করতে পারি। কফি সপ করতে পারি। ভাল কথা বলেছিস তো। শালা বুদ্ধিটা কোথায় রাখিস। এতোদিন বললি না কেন। আজ থেকে আমরা শুরু করি। হ্যাঁ। আজ থেকে। শুরু হলো তাদের সমবায় সমিতির নতুন যাত্রা।

ছবি
সেকশনঃ গল্প
লিখেছেনঃ Md Enamul Huq তারিখঃ 22/10/2019
সর্বমোট 1293 বার পঠিত
ফেসবুকের মাধ্যমে কমেন্ট করুণ

সার্চ

সর্বোচ্চ মন্তব্যকৃত

এই তালিকায় একজন লেখকের সর্বোচ্চ ২ টি ও গত ৩ মাসের লেখা দেখানো হয়েছে। সব সময়ের সেরাগুলো দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

এই তালিকায় একজন লেখকের সর্বোচ্চ ২ টি ও গত ৩ মাসের লেখা দেখানো হয়েছে। সব সময়ের সেরাগুলো দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন