ব্যাকগ্রাউন্ড

ফেইসবুকে!

পরিচয়

পরিচয় মোঃ এনামুল হক পর্ব ১ ****************************************** আরমান চটপটি বিক্রি করেন। তার একছেলে দুই মেয়ে। ছেলে অনার্স কমপ্লিট করে বাবাকে সাহায্যে করেন। মেয়ে সুমাইয়্যা কলেজে পড়ে। ছোট মেয়ে রিমি চঞ্চল সেভেনে পড়ে। বাবার এই ব্যবসা দিয়ে সবার খরচ চলে। ছেলে সজলেরর পরা শেষ হবার পর তার খরচ কমেছে। কিন্তু ২য় মেয়েটার খরচ বেড়ে চলেছে। সজল এস এস সি পাশ করার পর থেকে বাবাকে সাহায্যে করে। মা শেফালী গৃহিনী। বড় মেয়েকে খুব ভালবাসেন সকলে। রাস্তায় ভ্যানে করে চটপটি বিক্রি করেন আরমান। সজল তার বাবার পরিচয় দেয়। মেয়ে সুমাইয়্যা কলেজে যাবার পর থেকে তার মধ্যে রি চলে আসে। নিজেকে পরিপাটি করে রাখে । দামী পোষাক দিতে হয়। হাত খরচের টাকা বেশি করে দিতে হয়। আরমান বলেন কিরে মা এতো টাকা কেন লাগে? বাবা আমাদের সকল বন্ধু বান্ধবীরা বড়লোকের সন্তান। তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে না পারলে সম্মান থাকবে। কই তোর ভাইয়ের বেলাতো এমন হয় নি। বাবা তুমি দেবে না তাই বলো। দিচ্ছি। তবে এমন কোন কাজ করো না যা তোমাকে পেছনে ফেলে দেব। টাকা দিলেন আরমান সাহেব। মা শেফালী বললেন কাজটা উচিত হয় নি তোমার। কি? রোজ রোজ এতো টাকা দেবার মানে কি? কোথায় যায় কি করে তার খুঁজ রাখো। মেয়ে বড় হয়েছে এসব খুঁজতে গেলে হিতে বিপরীত হবে। বুঝতে পেরেছো। ছেলের বেলা ঠিকি খুঁজ নিতে। নিয়েছি বলে আজ আমার সোনার টুকরো ছেলে হয়েছে। মেয়েকেও দেখা উচিত। এভাবে ছেড়ে দিয়ে ভুল করছো। রিমি এসে বললো বাবা আমাকে স্কুলের টাকা কম দাও। সজল তোমাকে দেয় না। ওটা ভাইয়্যার কাছ থেকে নেই। ও তোমার দেখার দরকার নাই। বাপবা। ডাবল বোনাস। হ্যাঁ। আজ স্কুলে যাবে না। স্কুল তো বন্ধ। সরকারী ছুটি। তাহলে সুমাইয়্যা গেলো কোথায়? কলেজে যাবে। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেবে। সজল কোথায় ? ভাইয়্যাতো সকালে বেড়িয়েছে তোমার চটপটির গাড়ি নিয়ে। আচ্ছা ওকে অনার্স পড়িয়েছি কি এমনিএমনি।আমার চটপটি ব্যবসা করার জন্য। চাকরী বাকরী কিছু দেখে না কেন। ভাইয়্যা চাকরী করবে না। কেন? ভাল লাগে না। নিজের অধীনস্ত হয়ে থাকবে। কারো কাছে পরাধীন থাকতে রাজী নয়। শেফালী বললেন আমিও অনেক বলেছি। শুনবে না। চাকরী করতে ওর ভাল লাগে না। কেন? লেখাপড়া জানা ছেলে তাক না। ওর মতোওকে চলতে দাও। তা সত্য। যেভাবে আছে ওর স্বপ্ন ওকে বাস্তবায়ন করতে দাও। কিসের স্বপ্ন ? ও চটপটির একটা দোকান খুলবে। বড় করে। দোকান নেবে। কর্মচারী রাখবে। টাকা পাবে কোথায়।? বলেছে ব্যবস্থা করবে। কিভাবে করবে? ব্যবসার টাকা দিয়ে। কিছু জমিয়েছে। কাজ করুক ওর মতো করে। এটাও কর্ম। কর্মকে সম্মান না দেখালে জীবনে বড় হওয়া যায় না। ঠিক বলেছো বাবা সজল চলে এসেছে। বাবার কথায় সায় দিলো। রিমি এসে ওর গলা ধরে কোলে বসে পড়লো। সজল বলল দেখ বাহিরে যে গরম। ঘেমে এসেছি। তার কাছে ঘামের গন্ধ লাগছে না। শেফালী ধমক দিয়ে বললেন নাম কোল থেকে। এতোবড় ডিঙ্গি মেয়ে হয়েছে তবুও ভাইয়ের কোল ছাড়ছে না। ছাড়বো না। আর ঘামের গন্ধ বলছ ওটা আমার অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। আমার চকলেট কই। আচ্চা এতো বড় হয়ে গেছিস চকলেট খাওয়া ছাড়তে পারলি না। পারবো না । সজল চকলেট দেয়। সুমাইয্যার কথা জিজ্ঞেস করে। শেফালী বললেন কলেজে গিয়েছে। আজতো বন্ধ। কি কাজে গিয়েছে। মা আমি গোসল করে আসছি। তুমি খাবার দাও। একটু বিশ্রাম নিয়ে আবার বেরুতে হবে। যা গোসল করে আয়। সজল গোসল করতে চলে যায়। সুমাইয়্যা কলেজে গিয়েছে। তার বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে। সকল বন্ধুরা তার বড়লোকের ছেলে মেয়ে। তাদের সাথে পাল্লা দিতে সে দামী পোষাক আসাক চালচলন এমনকি খরচের টাকা বেশি নিয়ে আসতে হয়। বাবা আর ভাইয়ের কষ্টের টাকা সে নিয়ে আসে। সবাই তাকে একটু আদর করে বলে সে সুযোগ নেয়। রিমি হয়েছে তার উল্টো। আদর ভালবাসা পায়। কিন্তু সুযোগ গ্রহন করে না। তার বাবার যা ব্যবসা আছে তাই বলে। কোন মিথ্যে অজুহাত দাড়ঁ করায় না। তার স্কুলের বন্ধুদের সাথে কথা বলেছে। সবাই যার যার বাবার কাজের ধরণ নিয়ে আলোচনা করেছ। তার কাছে এলে সবাই জানতে চায় তোর বাবা কি করেন? ব্যবসা। কিসের? চটপটির ব্যবসা করেন। কি? আশ্চর্য হবার কি আছে? যা সত্য তাই বললাম। না। আমরাতো অন্য কিছু ভেবেছিলাম। মানে। মানে তোর বাবা কোন সরকারী বা বেসরকারী চাকুরীজীবি হবেন। কিন্তু তুই বলছিস চটপটির ব্যবসা করেন। ব্যবসাটা কি খারাপ। না। কাজ কাজই। কাজকে অবহেলা করতে নেই। ভাবসম্প্রসারন পড়িস নি।মানুষ বেঁচে থাকে তার কর্মের মধ্যে বয়সের মধ্যে নয়। তাছাড়া কাজকে সম্মান না করলে কেউ কখনো বড় হতে পারে না। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট একজন ছিলেন বাদাম বিক্রেতা। আর তোর বাবা চটপটিব্যবসা করেন। সম্মান জানাই তোকে। পরিচয় গোপন করিস নি। গোপন করার কিছুই নেই। যা সত্যে তাই বললাম। ধন্যবাদ সত্য বলার জন্য। সকলেই রিমিকে ভালবাসে। কেননা সে অকপটে সব স্বীকার করে। তার বড় ভাই বাবার ব্যবসায় সময় দেন। শিক্ষকগণ তাকে সম্মান করেন। সম্মান করেন তার বড় ভাইকে। অনার্স পাশ করার পর চাকরীর আশা না করে ব্যবসা করছেন। সুমাইয়্যা তার বন্ধুদের তার বাবার পরিচয় দিয়েছে বিরাট ব্যবসা তাদের। এক্সপোর্ট ইমপোর্টের ব্যবসা।কলেজের সবার কাছে সে মিথ্যের আশ্রয় নেয়। তার বান্ধবী মনা বলল সুমাইয়্যা তোর বাবা বিরাট বড়লোক। চল আজ আমাদের খাওয়াবি। কি খাবি বল? বেশ কিছু না। আমাদের চটপটি খাওয়ালে চলবে। চল। বিকেল বেলা সজল কাছের পার্কের সামনে বসে চটপটি বিক্রি করে। সুমাইয়্যা জানে। সে সজলকে অনেকদিন বারন করেছে এখানে বসে চটপটি বিক্রি না করে। তাতে তার সমস্যা হয়। সবাই বের হয়ে সজলের চটপটির গাড়ির সামনে যায়। সুমাইয়্যার নামে নাম দেয়া। সুমাইয়্যা চটপটি হাউস। মনা বলল আরে দেখ তোর নামে চটপটির গাড়ি। আমি মনে করেছি তোদের ব্যবসা নাকি। আশ্চর্য্য তো আমি বললাম না আমার বাবার বিরাট ব্যবসা। বাবা সবসময় বিদেশে থাকেন। ভাইয়্যা বাবার ব্যবসায় সাহায্যে করে থাকে। যা চটপটির অর্ডার দেয়। সজলের সাথে একটা ছেলে থাকে। সে সুমাইয়্যাকে চেনে। সজলকে বলল ভাইয়্যা আপনার বোন। দেখেছি। মিথ্যে বলছে কেন ? বলতে দেয়।চুপচাপ দেখে যা। বাড়িতে কাউকে কিছু বলবি না। মনে থাকবে। থাকবে। যা।ওদের চটপটি দিয়ে আয়। সে সবাইকে চটপটি দিলো। বিল পরিশোধ করে বাড়িতে চলে গেলো।

ছবি
সেকশনঃ সাহিত্য
লিখেছেনঃ Md Enamul Huq তারিখঃ 11/10/2019
সর্বমোট 417 বার পঠিত
ফেসবুকের মাধ্যমে কমেন্ট করুণ

সার্চ

সর্বোচ্চ মন্তব্যকৃত

এই তালিকায় একজন লেখকের সর্বোচ্চ ২ টি ও গত ৩ মাসের লেখা দেখানো হয়েছে। সব সময়ের সেরাগুলো দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

এই তালিকায় একজন লেখকের সর্বোচ্চ ২ টি ও গত ৩ মাসের লেখা দেখানো হয়েছে। সব সময়ের সেরাগুলো দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন