একজন প্রিয়া সাহা কেন রাষ্ট্রদ্রোহী?
সাইয়িদ রফিকুল হক
সত্য সবাই বলতে পারে না। সত্য সবাই ভালোবাসতেও পারে না। সত্য গ্রহণ করার যোগ্যতাও সবার থাকে না। সত্য খুবই শক্তকঠিন ও দামি জিনিস। তাইতো বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর শেষ বয়সের লেখা ‘শেষ লেখা’ কাব্যে বলেছিলেন:
সত্য যে কঠিন,
কঠিনেরে ভালোবাসিলাম,
সে কখনো করে না বঞ্চনা।
সত্যি, এই সত্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে চিরদিন মহীয়ান ও গরীয়ান করেছে।
অতিসম্প্রতি (১৬ই জুলাই মতান্তরে ১৮ই জুলাই, ২০১৯ খ্রিস্টাব্দ; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের আমন্ত্রণে) বাংলাদেশের প্রিয়া সাহা নাম্মী একজন মানবাধিকারকর্মী ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক পদের নেত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহামান্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, মুসলিম মৌলবাদীদের আগ্রাসনের কারণে বাংলাদেশ থেকে সংখ্যালঘুসম্প্রদায়ের তথা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানদের ৩ কোটি ৭০ লক্ষ মানুষ নিখোঁজ।’ আসলে, তিনি বুঝাতে চেয়েছেন, এরা বাংলার মৌলবাদী মুসলমানদের অতিআদরে ও অতিযত্নে আজ বিলুপ্ত হয়ে গেছেন।
প্রিয়া সাহাও সত্য বলেছেন। কিন্তু তার সত্য বাঙালি-মুসলমান গ্রহণ করতে পারেনি। এমনকি অনেক দালাল-হিন্দুও এর বিরোধিতা করেছে।
প্রিয়া সাহার বক্তব্য একেবারে সত্য। স্বচ্ছজলের মতো একেবারে পরিষ্কার। এখানে, কোনো রাখঢাক কিংবা ভণ্ডামি নাই। তিনি বলেননি যে, একদিনে বা একবছরে মাইনোরিটির এই জনসংখ্যা বিলীন হয়ে গেছে। ধীরে-ধীরে বাংলাদেশ থেকে ৩ কোটি ৭০ লক্ষ হিন্দু-বৌদ্ধ-খিস্টান বিতাড়িত হয়েছে। এদের কেউই স্বেচ্ছায় বাংলাদেশত্যাগ করেননি। এদের অতিমাত্রায় অত্যাচারে দগ্ধ করে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। আর তাই, প্রতিনিয়ত এদের হুমকি-ধমকি, খুন-ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ, লুটতরাজ, ভয়ভীতি ইত্যাদির মাধ্যমে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। আর এই ৩ কোটি ৭০ লক্ষ সংখ্যালঘু মানুষকে দেশত্যাগে বাধ্য করেছে ভদ্রবেশী মুসলমান, উগ্র ও মৌলবাদী মুসলমান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তথাকথিত নেতাকর্মী-নামধারী মুসলমান। সবখানে অত্যাচারী শুধু মুসলমান। আর শুধু মুসলমানদের অত্যাচারের কারণেই এত সংখ্যক সংখ্যালঘু মানুষ পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্র ভারতে পালিয়ে আশ্রয়গ্রহণ করেছে। এছাড়া, এই মানুষগুলোর বেঁচে থাকার আর-কোনো উপায় ছিল না বলে তারা এমনটি করেছেন। নইলে, সাধে কি কেউ নিজের ভিটেমাটি ছেড়ে পরদেশে আশ্রয়গ্রহণ করে?
ভারতীয় উপমহাদেশে কেউ-একজন কখনো কোনো সত্যকথা বললে তাঁর আর-কোনো নিস্তার নাই। বিশেষত বাংলাদেশে ও পাকিস্তানে কেউ কোনো সত্যকথা বললে তাঁকে আঘাতে-আঘাতে জর্জরিত করা হবে। মিথ্যাবাদী-মিথ্যাখেকোরা চিরদিন লেগে থাকবে তাঁর পিছনে। এমনকি তাঁর জীবননাশেরও বিরাট আশঙ্কা রয়েছে। এই জনপদের মানুষগুলো ‘সত্য’ একেবারেই সহ্য করতে পারে না। আর এইক্ষেত্রে মুসলমানরা আরও বেশি আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। বাংলাদেশে খুব কমসংখ্যক মুসলমানই আছেন—যারা সত্য সহ্য করতে পারেন। মুসলমানদের গোড়ায় গলদ। ধর্মের ব্যাপারে তারা সবসময় কট্টরপন্থী। আর তারা জন্মের পর থেকে নিজের ধর্মব্যতীত আর-কোনো ধর্মকে ‘ধর্মজ্ঞান’ করতে শেখেনি। অর্থাৎ, জন্মের পর থেকে একজন মুসলমান মনে করে থাকে: ইসলাম একমাত্র ধর্ম। ইসলাম ব্যতীত আর-কোনো ধর্ম নাই, মুসলমান ব্যতীত আর-কোনো জাতি নাই, এবং পৃথিবীর অন্যান্য সব ধর্ম মিথ্যা! তারা আসমানি-কিতাবপ্রাপ্ত ইহুদীধর্ম ও খ্রিস্টানধর্মও মানে না। আর মুসলমানদের কাছে মূর্তিপূজার হিন্দুধর্ম তো মানার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। এর বাইরে নগণ্যসংখ্যক মুসলমান রয়েছেন—যারা অসাম্প্রদায়িক ও পরধর্মের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তথা পরমতসহিষ্ণু। তাছাড়া, অপরাপর সকল মুসলমানই সবসময় সাম্প্রদায়িক ও অন্যান্য ধর্মের ব্যাপারে চরম বিদ্বেষভাবাপন্ন।
প্রিয়া সাহার বক্তব্যের পর আমাদের বাংলাদেশে অনেকেই মূর্খতার পরিচয় দিয়েছে। এরা বিভিন্ন সুশীল-নামধারী থেকে শুরু করে আইনের ধ্বজাধারী, কথিত রাজনীতিবিদ, সাবেক আমলাসহ আরও অনেকে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-নামধারী পশুগুলো সবিস্ময়ে বলেছে, “বাংলাদেশে এত হিন্দু কোথায় ছিল! এত হিন্দু বাংলাদেশে কখনো ছিল না। আর সব হিন্দু তো স্বেচ্ছায় ভারতে চলে গেছে!” এইজাতীয় পশুদের বক্তব্য শুনেছি। আর বুঝেছি, বাংলাদেশে পশুদের সংখ্যা বাড়ছে বৈ কমছে না।
এই মূর্খদের উদ্দেশ্যে বলছি: শোনো মূর্খ সাম্প্রদায়িক পশুসম্প্রদায়, এজন্য আমাদের ১৯০১ সাল থেকে ভাবতে হবে না। ১৯৪৬ সালের রায়টের এবং ১৯৪৭ সালের দেশভাগের ও রায়টের আগে বাংলাদেশে কত শতাংশ হিন্দু ছিল? তা নিশ্চয়ই তোমরা জানো না? আমি বলছি, শোনো: তখন বাংলাদেশে কমপক্ষে ৪৮% হিন্দু ছিল। তারও আগের কথা বলতে গেলে, এব্যাপারে আমার মরহুম আব্বাজানের একটি উক্তির কথা স্মরণ করতে হয়। তিনি বলেছিলেন, “দেশভাগের আগে আমরা এদেশে হিন্দু-মুসলমান প্রায় সমান-সমান ছিলাম। আবার কোনো-কোনো অঞ্চলে হিন্দুই বেশি ছিল!” এইরকম সত্যকথা আমাদের আরও অনেক আত্মীয়স্বজন থেকে শুরু করে দেশের প্রকৃত তত্ত্বজ্ঞানীব্যক্তিবর্গ বলেছেন। সেই হিসাব-অনুযায়ী প্রিয়া সাহা তো হিন্দুদের দেশত্যাগে বাধ্য করার কথা কমই বলেছেন। বিশিষ্ট সুবিধাবাদী ও গবেষক ড. আবুল বারাকাত সাহেব প্রিয়া সাহার বক্তব্যের বিরোধিতা করে এই সংখ্যাটা ১ কোটি ১৩ লাখের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চেয়েছেন। তিনি ১৯৬৪ সাল থেকে এই হিসাব করেছেন। আসলে, বারাকাত সাহেবদের তথ্যে বিরাট গণ্ডগোল রয়েছে। তারা সুবিধাবাদী। আসল সত্য, এ-পর্যন্ত ৪ কোটির উপরে ‘হিন্দুসম্প্রদায়ে’র লোকজন বাংলার মুসলমানদের অত্যাচারে জর্জরিত হয়ে দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। এই দৃষ্টিকোণ থেকে প্রিয়া সাহার বক্তব্য সম্পূর্ণ সঠিক ও তথ্যবহুল।
প্রিয়া সাহা সত্য বলেছেন। সত্য মুসলমানরা সহ্য করতে পারে না। বাঙালির একটা অংশও তা সহ্য করতে পারে না। তাইতো দেখতে পাচ্ছি, প্রিয়া সাহার অপ্রিয় সত্যকথা শুনে আমাদের দেশের কথিত ‘হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদে’র দালালগুলোর মাথানষ্ট হয়ে গেছে। তারা প্রিয়া সাহার এই সত্য মেনে নিতে পারেনি। এই দালালদের মুখপাত্র অ্যাডভোকেট রানা দাশ গুপ্ত নামক ছদ্মবেশী বলেছে, ‘প্রিয়া সাহা সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য এসব বলেছে।’ আর এসব বলেই দালাল রানা দাশ গুপ্তরা ক্ষান্ত হয়নি। তারা প্রিয়া সাহাকে তাদের দালাল-সংগঠন থেকে বহিষ্কার পর্যন্ত করেছে! আসলে রহস্য কী? রহস্য একটাই: প্রিয়া সাহা খুব সত্য বলে ফেলেছেন। এগুলো ভয়ানক অপ্রিয় সত্য। এইসব সত্য সহ্য করার মতো শক্তি এই দেশের সাম্প্রদায়িক মুসলমানদের নাই (যাঁরা অসাম্প্রদায়িক তাঁরা এই আলোচনার বাইরে)।
প্রিয়া সাহা অপ্রিয় সত্য বলার পর বাংলাদেশবিরোধী অনেক রাজাকারের বাচ্চা রাজাকারকে একরাতের মধ্যে দেশপ্রেমিক সাজতে দেখেছি! অথচ, এইসব রাজাকার জন্মজন্মান্তরে বাংলাদেশবিরোধী আর পাকিস্তানের দালাল আর মুসলমান-নামধারী চিরদিন হিন্দুবিদ্বেষী। এরা এখন প্রিয়া সাহার সত্য কথাটাকে ধামাচাপা দিতে নানারকম সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির কথা বলছে। আরে, বাংলাদেশবিরোধী রাজাকারের বাচ্চা রাজাকার, বাংলাদেশে যদি সত্যিকারের সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতি থাকতো—তাহলে এতদিনে ৩ কোটি ৭০ লক্ষ কিংবা ৪ কোটির ওপর হিন্দু অত্যাচারিত হয়ে দেশত্যাগ করতে বাধ্য হতো না। এখানে, হিন্দুদের প্রতি মুসলমানদের এত ভালোবাসা যে, তা হিন্দুরা সহ্য করতে পারে না! পূর্বেই বলেছি, মুসলমানরা হিন্দুদের দেশত্যাগে বাধ্য করার জন্য নানারকম শয়তানী ও বদমাইশীর আগ্রাসন পরিচালনা করে থাকে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: হিন্দুদের ওপর সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অত্যাচার। এর মাধ্যমে মুসলমানরা হিন্দুদের দেশত্যাগে বাধ্য করে আসছে।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের কথা আমাদের সবার মনে আছে। তখন নৃশংস পাকবাহিনীর নারকীয় অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য বাংলাদেশের দেড়কোটির ওপর মানুষ ভারতে আশ্রয়গ্রহণ করেছিল। এর মধ্যে প্রায় এক কোটি ছিল হিন্দুসম্প্রদায়ের লোক। মুক্তিযুদ্ধশেষে তারা আর দেশে ফিরতে পারেননি। তাদের ফেলে যাওয়া ঘরবাড়ি রাতারাতি হয়ে গেছে ‘শত্রু-সম্পত্তি’ বা ‘অর্পিত-সম্পত্তি’! কী দারুণ বিস্ময়কর ব্যাপার! আর এগুলো এখন অত্যাচারী-মুসলমানদের পেটে! আসলে, এগুলো অত্যন্ত কুপরিকল্পিত চক্রান্ত। আর এই চক্রান্ত এখনও চলছে। দেশটাকে হিন্দুশূন্য করার বিরাট ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত চলছে। এসবই এখন ঐতিহাসিক সত্য। প্রিয়া সাহা কোথায়, কোনখানে, আর কীভাবে মিথ্যা বলেছেন? কেউ আমাকে একটুখানি দেখাবেন?
অনেক মূর্খ (এদের নামের আগে আবার ‘ব্যারিস্টার’ আছে!) প্রিয়া সাহার সত্যভাষণে রাষ্ট্রদ্রোহিতা খুঁজে পায়! আরে পশু, রাষ্ট্রদ্রোহিতা কাকে বলে জানিস? রাষ্ট্রদ্রোহিতার সংজ্ঞা শিখেছিস কখনো কারও নিকট থেকে? এরা কিছু জানে না, বোঝে না, আর শেখে নাই কিছু। এইজাতীয় পাপীগুলো, প্রিয়া সাহার ঐতিহাসিক সত্যকে রাষ্ট্রদ্রোহিতা বলে চালানোর অপচেষ্টা করেছিল। কিন্তু ওদের ‘ট্রাম্প-বাবা’র নাম শুনে এখন পিছিয়ে গিয়েছে। আরে শয়তান, রাষ্ট্রদ্রোহিতা হয় রাষ্ট্রবিরোধী কোনো কিছু করলে বা বললে কিংবা রাষ্ট্রের কোনো ক্ষতি করার চেষ্টা করলে কিংবা রাষ্ট্রের ভিতরে কোনো অপতৎপরতা চালালে। সেই হিসাবে তো বাংলাদেশের চিরকালীন রাষ্ট্রদ্রোহী হলো: হেফাজতে ইসলাম ওরফে হেফাজতে শয়তান ওরফে হেফাজতে শুয়োর, জামায়াত-শিবির, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, চোরমোনাইয়ের ভণ্ডপীর ও তার ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, ইসলামী ঐক্যফ্রন্ট ইত্যাদি। এরা রাষ্ট্রের প্রধান শত্রু। এরা প্রতিদিন রাষ্ট্রবিরোধী-অপতৎপরতা চালাচ্ছে। আর প্রিয়া সাহা এই পশুদের অপতৎপরতার বিরুদ্ধে মাত্র কয়েকটিট কথা বলেছেন, আর এদের অত্যাচারে এই দেশ থেকে হিন্দুদের বিতাড়নের কথা বলেছেন। এগুলো বুঝি রাষ্ট্রদ্রোহিতা? দুঃখের বিষয় হলো: অনেক শুয়োরের বাচ্চাও এখন বুদ্ধিজীবী।
এই বাংলাদেশে এ-পর্যন্ত সংখ্যালঘু-সম্প্রদায়ের ওপর যে নির্যাতন হয়েছে—তা ইতিহাসের আলোকে ভয়াবহ, ভয়ংকর, ভয়ানক, জঘন্য ও স্মরণাতীত। ১৯৪৬, ১৯৪৭ ও ১৯৭১ সাল সর্বাপেক্ষা বৃহত্তম সংখ্যালঘু-নির্যাতনের ইতিহাস। সেই ধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে। আজও এদেশের হিন্দুসম্প্রদায় কোনোভাবে টিকতে না পেরে ভারতে আশ্রয়গ্রহণ করছেন। বাংলাদেশের যেকোনো সরকার ও বাংলাদেশরাষ্ট্র এখানে কোনোভাবে উপযুক্ততা ও সক্ষমতার পরিচয় দিতে পারেনি। একজন প্রিয়া সাহাও হিন্দু হওয়ার কারণে সীমাহীন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তার ঘরবাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তাহলে, নির্যাতিত সংখ্যালঘু-সম্প্রদায়ের একজন কেন রাষ্ট্রদ্রোহী হবেন? আর যারা সংখ্যালঘুদের ওপর জুলুমনির্যাতন চালাচ্ছে তারা কী? প্রকৃতপক্ষে, সত্য কথাটা বলায় প্রিয়া সাহা আজ রাষ্ট্রদ্রোহী!
প্রিয়া সাহার একমাত্র অপরাধ তিনি খুব অপ্রিয় সত্য বলে ফেলেছেন। তাই, হিন্দুবিতাড়নকারী, হিন্দুর জায়গাজমি-দখলকারী ও হিন্দুবিদ্বেষী সকল পশুগোষ্ঠী প্রিয়া সাহাকে রাষ্ট্রদ্রোহী বলার মতো ধৃষ্টতা দেখাচ্ছে। প্রিয়া সাহাকে পুরস্কৃত করে তার বিরোধিতাকারী এই পশুদের কঠোরহস্তে দমন করা রাষ্ট্রের প্রধান ও অপরিহার্য কর্তব্য। তাহলেই স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশরাষ্ট্র ৩০লক্ষ শহীদের স্বপ্ন পূরণ করতে সক্ষম হবে।
একজন প্রিয়া সাহা বাংলাদেশের সংখ্যালঘু নির্যাতনের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরায় তিনি এখন রাষ্ট্রদ্রোহী! বাংলায় একটা প্রবাদ আছে: উচিত কথায় গোঁসাই বেজার আর গরম ভাতে বিলাই! প্রিয়া সাহা সত্য কথাটা বলে ফেলায় তিনি এখন সাম্প্রদায়িক পশুগোষ্ঠীর প্রতিহিংসার শিকার। তার গলায় জোরপূর্বক রাষ্ট্রদ্রোহিতার তকমা ঝুলিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টা চলছে। আর হেফাজতে ইসলাম তথা হেফাজতে শয়তানের পশুরা প্রতিনিয়ত বাংলাদেশবিরোধী অপকাণ্ড করে সত্যিকারের রাষ্ট্রদ্রোহিতার পরিচয় দিচ্ছে—তারা আছে জামাই আদরে। আসলে, সত্য শুনতে কারও ভালো লাগে না। এবার বুঝেছেন তো একজন প্রিয়া সাহা কেন রাষ্ট্রদ্রোহী?
আমাদের দেশের সরকারের কাছেও প্রশ্ন: একজন প্রিয়া সাহা কি আসলেই রাষ্ট্রদ্রোহী? কেন ও কীসের ভিত্তিতে সরকারের কিছু লোকজন এসব বলাবলি করছে? আপনাদের কাছে এ-বিষয়ে কোনো সঠিক ও উপযুক্ত প্রমাণ আছে কি? থাকলে একবার দেখান তো।
একজন প্রিয়া সাহা কেন রাষ্ট্রদ্রোহী?
সাইয়িদ রফিকুল হক
২৫/০৭/২০১৯