ব্যাকগ্রাউন্ড

ফেইসবুকে!

বিবাহ লইয়া এক বা দুই স্নিপ-০০২।

যাই হোক, আগের পর্বে যে উল্লেখ করেছিলাম, বড় দুই বোনের সাথে আন্তঃ মহাদেশীয় স্কাইপ কেলেঙ্কারি আই মিন, স্কাইপ বৈঠকের কথা, সেটা বলি বিস্তারিত! আব্বা-আম্মা অনেকদিন ধরেই আমার বিয়ের জন্যে জোড়াজুড়ি করছেন! কিন্তু এ বিষয়কে আমি তেমন একটা পাত্তা দেই নাই, আমার একদম বড়বোনও চান না আমি এখনই বিয়ে করি (গত বছরের কথা এটা, এ বছর উনিও মাঠে নেমে পড়েছেন মোটামুটি আঁটঘাট বেঁধেই!), তাই আমি বাসায় মোটামুটি সেফ জোনেই ছিলাম! তো আপুর শেল্টারে আমি ভালোই বিন্দাস ছিলাম! আম্মা মাঝে মাঝে তানা দেন, কিন্তু ঐ পর্যন্তই! কিন্তু আব্বা একদিন সিরিয়াস হয়ে দুই বোনকে বললেন, আমার বিয়েশাদি সম্পর্কে কাহিনী কি? কোন পছন্দ থাকলে যেন বাসায় বলি, নাহলে অন্য কোন সমস্যা আছে কিনা সেটাও যেন খুলে বলি! তো দুই বোন দুই দেশ থেকে আমাকে সময় দিলেন স্কাইপে আসার জন্য। প্রায়ই আমরা তিন ভাই-বোন এই আন্তঃ মহাদেশীয় স্কাইপ রুদ্ধদ্বার বৈঠকের আয়োজন করায়, আমার মোটেও সন্দেহ ছিল না আসলে ওদের উদ্দেশ্য কি ছিল!

 

তো প্রথমে স্কাইপে এসে কিছু কুশল বিনিময়, পুরোনো স্মৃতি রোমন্থনের পরে আমার ডাক্তার বোন কথা পারলেন! খুব ষড়যন্ত্রের ভঙ্গিতে ফিসফিস করে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, “আচ্ছা! আমি তো তোর বোন, আর এছাড়াও আমি তো একজন প্র্যাকটিসিং ডাক্তার, আমার কাছে তো তোর কিছু লুকানোর নাই! তোর বন্ধুরা তাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক কত্ত সমস্যা নিয়ে আসে! তুইও আমার কাছে খুলে বলতে পারিস! আচ্ছা! এই যে তোর কোন গার্লফ্রেন্ড নাই, কাহিনী কি! তুই কি গে! মানে এতদিন ধরে দেশের বাইরে আছিস, হয়েও তো যেতে পারিস! আমাকে খুলে বলতে পারিস, অসুবিধা নাই! আমরা মেনে নেব! দুই ভাইয়ের একজন গে হয়ে গেলে ক্ষতি কি? অন্তত আব্বা-আম্মাকে কষ্ট করে মেয়ে দেখার অত্যাচার থেকে তো রক্ষা করা যাবে!”

 

আমি তো, পুরাই টিনের চালে কাক, আমি তো অবাক! কয় কি মুমিনা! আজকে একটা গার্লফ্রেন্ড নাই বলে এই জিনিসও শুনতে হলো! হে! ভগবান! আমাকে উঠায়ে লইয়া যাও এই নিষ্ঠুর পিথিমী থিকা! দুই আপুকেই বুঝায়ে বললাম, যে আমার এ বিষয়ে যেমন কোন অভিযোগ নাই (মানে অন্যেরা করলে আরকি! আমাকে ডিস্টাপ না করলেই হলো!), কিন্তু আমি এখনো এই লাইনে হাঁটা (নাকি শোয়া!) শুরু করি নাই, এবং অদূর ভবিষ্যতেও তার দূরবর্তী সম্ভাবনাও নাই! দুই আপুই বলল, “তাহলে তোর কোন গার্লফ্রেন্ড নাই কেন?” আমি বললাম, চেষ্টা তো কম করি নাই, ছোটবেলায় দেশে থাকতে তো আর অভাব ছিল না, কিন্তু এদেশে এসে কোন সাদা মেয়েকে পঁটানোর কোন হিসেবই করি নাই, কারণ আমি দেশে ফিরে যাবোই! থাকি ও পড়েছিও এমন ইউনিভার্সিটিতে যেখানে সাদা মেয়ে ছাড়া এশিয়ান মেয়ে ছিল অনেক কম! এছাড়াও আমার দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য আরেক দেশের মেয়েকে তার দেশ, শিঁকড় থেকে টেনে হিঁচড়ে উঠিয়ে নিয়ে বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য জোরাজুরি করার তো কোন মানে হয় না! আমি যদি আরেকজনের দেশে থাকতে অনিচ্ছা পোষণ করি, তাহলে আরেকজনের কিভাবে আমার দেশে যেয়ে ভাল লাগবে! আর এত্ত কনভিন্সিংও আমি না যে, আমার প্রেমে দিওয়ানা হয়ে কোন বিদেশী আমার হাত ধরে ভিনদেশে যেয়ে সংসার পাতার জন্যে রাজি হয়ে যাবে! আর আশেপাশে বাঙালি যে মেয়েদের পাই, এরা হয় আমার চেয়ে অনেক বড় বয়েসে, নাহয় বেশিই ছোট! এদের মধ্যেও যাদেরকে কিছুটা মনে ধরে, কিছুদিন পরেই আমার রাজনৈতিক ক্যাঁচাল, প্যাঁচাল, মুক্তিযুদ্ধের প্রতি আনকম্প্রোমাইজিং চিন্তা-ভাবনা ও রাজনীতির প্রতি দুর্নিবার নেশা দেখে- ভয় পেয়ে আপন পৈতৃক প্রাণ নিয়ে ভেগে বাঁচে! তো আইয়ুব বাচ্চু, চাচ্চুর ভাষায় বলতে হয়, “আমার কি দোষ! আমিও তো মানুষ!” যাই হোক, দুই বোনকেই সেদিন বুঝিয়ে-শুনিয়ে স্বান্তনা দিয়ে পাঠালাম! কিন্তু নিজের মাথাতেই নিজে কাঁঠাল ভাঙলাম! সেদিনের পর থেকে আব্বা-আম্মা বিপুল উদ্দ্যমে ঝাঁপিয়ে পড়েছে বড় ছেলের বিয়ের এন্তেজাম করার জন্যে! মানে জীবনের এত্তো পরীক্ষায় এত্তোকিছু করার পরেও বাপ্-মা যতটা না খুশি হয়েছিল, তার চেয়ে বেশি খুশি হয়েছে আমি সমকামী হয়ে যাই নাই এটা জেনে, এজ ইফ “আমার পোলা ঠিক আছে! পাশ করছে লাইনে থাকার পরীক্ষায়!” হায়রে! কপাল!
আগের পর্ব পড়তে পারবেন এখান থেকে । 

ছবি
সেকশনঃ কৌতুক
লিখেছেনঃ বটতলার উকিল তারিখঃ 17/11/2017
সর্বমোট 8624 বার পঠিত
ফেসবুকের মাধ্যমে কমেন্ট করুণ

সার্চ

সর্বোচ্চ মন্তব্যকৃত

এই তালিকায় একজন লেখকের সর্বোচ্চ ২ টি ও গত ৩ মাসের লেখা দেখানো হয়েছে। সব সময়ের সেরাগুলো দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

এই তালিকায় একজন লেখকের সর্বোচ্চ ২ টি ও গত ৩ মাসের লেখা দেখানো হয়েছে। সব সময়ের সেরাগুলো দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন