আর কারও হয় কিনা জানি না, আমার হয়- বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা শুনলে মনের মধ্যে কেমন যেন একটা আনন্দ আনন্দ ভাব জাগে। মনে হয়, এই বুঝি দেশের তাবৎ অবিচারসমূহ সুবিচারে পরিণত হয়ে দলবেঁধে পায়ের কাছে এসে আছড়ে পড়ল। আমি একরতি স্বর্ণও কিনি না তবু বাজারে স্বর্ণের দাম কমলে খামোখাই একটু আনন্দ আনন্দ লাগে- বিষয়টা অনেকটা সেরকম।
শুনতে খুব খারাপ লাগবে যে, আমাদের সমাজে ভদ্রলোক বলে যারা পরিচিত তারা অধিকাংশই বেশ অশুদ্ধ মানুষ। নিদেনপক্ষে অশুদ্ধতার একটা লেভেল পর্যন্ত সবাই লালন করে এবং শুদ্ধজ্ঞানে তা ধারণ করেই সমাজে চলাফেরা করে। এই অশুদ্ধবোধ ধারণকারি মানুষগুলিই ধর্ম ধারণ করে ধর্মালয়ে যায়, এরাই আস্তিক-নাস্তিক, সংস্কৃতি কর্মী, রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, ব্যবসায়ী, আইনবিদ, শিক্ষক, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, সংবাদকর্মী, সরকারি-বেসরকারি চাকুরে এবং অন্যান্য পেশাজীবী। বিচারপতি বা বিচারিক কার্যকলাপসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গও এর বাইরে নন। এই দেশের সার্বিক পরিবেশ ও জলহাওয়ায় বেড়ে উঠে তেমন শুদ্ধ হবার সুযোগ খুবই কম। যা-ও আছে সে সুযোগ খুব বন্ধুর, ফলে কেউ সে পথে পা বাড়ায় না।
এ দেশের বিচারিক কার্যকলাপসংশ্লিষ্ট সকলকিছুর সমন্বয়ে যে প্রক্রিয়া চলছে সেটা হচ্ছে দেশের সবচেয়ে জঘন্য প্রক্রিয়া। কেউ যদি কপালের ফেরে আদালতের দরজায় গিয়ে থাকেন এ জ্বালা তিনি হাঁড়ে হাঁড়ে বুঝবেন। ফলে কোন কিছুতেই কোন আশার আলো চোখে পড়ে না। দিনশেষে আমজনতার জন্য সবই অন্ধকার।
সবকিছুতেই জনগণকে বোঝানোর যুক্তি আছে কিন্তু কোন কিছুতেই তাদের মুক্তি নেই। যুক্তি আছে, মুক্তি নেই- এই হলো বাস্তবতা।