পরিবর্তন খুব ভালো ভাবেই লক্ষ্য করা যাচ্ছে এবারের ঈদের নাটকগুলোতে।যা বাংলাদেশী দর্শকমহলে জনপ্রিয় করে তুলতে সক্ষম হবে।বর্তমানে নাটকের যে নাযেহাল অবস্থা!!
সেখানে এমন পরিবর্তন আমাকে রীতিমতো মুগ্ধ করেছে।
যার হাতে ক্যামেরা আছে, সেই নাটক করার জন্য বেরিয়ে পরে।ফালতু,বস্তাপঁচা কিছু একটা বানিয়ে ইউটিউবে আপলোড করে দেয়।এমন বস্তাপঁচা নাটকগুলো এতই বেশি যে, ভালো নাটকগুলো মন্দের আড়ালে পরে যাচ্ছে।
এসব ছাড়াও লুতুপুতু টাইপের নাটক খুবই হচ্ছে।যার অভিনেতা গুলো ইউটিউব থেকেই আসা।যারা অভিনয়ের অতি পারদর্শী।অভিনয় করতে গিয়ে অভিনয়ের চোদ্দ গুষ্টি উদ্ধার করে রেখে দেয়।
(ইউটিউব থেকে আসা সবাই খারাপ না।)সে সব আবার টিভি চ্যালেন গুলোতে On-Air ও হয়।কত তামাশা তাই না!!!
কয়েকজন বন্ধু মিলে ঘুরতে বের হল--
লুতুপুতু কয়েকটা ডায়লগ, কিছু ঘটনার বর্ণনা দিলো-আগা মাথার কোন সাদৃশ্য থাকলো না।তবুও সেটা অন-এয়ার হতে পারে।
ইউনিভার্সিটির কিছু বন্ধু লুতুপুতু,ম্যাডামকে নিয়ে ফানি,ইত্যাদি ইত্যাদি।
শুধু লুতুপুতু আর লুতুপুতু।।লুতুপুতু ছাড়া নাটকের গল্পই খুঁজে পাওয়া যায় না।
মোশারফ করিম অনেক ভালো মানের অভিনেতা।আমার অনেক পছন্দের।
কিন্তু তার বস্তা বস্তা ফালতু কমিডি নাটক আজকাল বেশ ইরিটিং লাগে।
এখানে ওনার দোষ নেই।পরিচালক তাকে ব্যবহার করতে পারছে না।
Quality & quantity একসাথে মেইনটেইন করা যায় না।তাই নাটকের সংখ্যা বাড়ছে।তবে কমেডিগুলো বস্তাপঁচা হচ্ছে।
আমরা যদি বাংলা সিনেমার দিকে লক্ষ্য করি তবে--
মিস্টার শাকিবকেও একই সারিতে ফেলতে হয়।
কারন শাকিবও বস্তা পঁচা সিনেমা দিয়ে ভরিয়ে দিয়েছে বাংলা চলচ্চিত্রের ভান্ডার কিন্তু কোয়ালিটি সম্পূর্ণ কিছু দিতে পারেনি।
মোশারফ করিমের উচিৎ বস্তাপঁচা কমেডি নাটক আর না করা।
ইংরেজিতে একটা কথা আছে,
"Excess of everything is bad"
এই বাক্য মোশারফ করিমের বস্তাপঁচা কমিডির জন্য যেমন প্রযোজ্য ,তেমনি শাকিবের বস্তাপঁচা সিনেমার ক্ষেত্রেও।অবশ্য শাকিবের ইদানীং ভালো পরিবর্তন হয়েছে।সামনে ভালো কিছু করবে বলে ধারণা করা যায়।এখন মোশারফ করিমও যদি বোঝে তবে তো ভালোই হত।
এবারের ঈদে মোশারফ করিমের কিছু নাটকের নামগুলো একবার পাঠ করে আসি। চলুন----
"জমজ-৭,বুলির বেল্কুনী,মীরজাফরের মৃত্যু চাই ইত্যাদি ইত্যাদি।
ভাই আপনারাই বলেন--
জমজ সিরিজ আর কয়দিন চিবিয়ে খাবে মানুষ??মোশারফের নাটকের নামগুলো খুঁজে পাওয়া যায় না ইদানীং। তাই যা ইচ্ছা তাই নাম একটা দিয়ে দেয়।
ঠিন যেন শাকিব এর সিনেমা নামের পরিণতি।
মোশারফ করিম দাদুকে অনেক বলেছি। আর না।সবশেষে ঐ একটা কথাই- ওনার কমেডি বাদ দেওয়া উচিৎ। আর যদি করেও কোয়ালিটি মেইন্টেই করা উচিত। একই রকম কমেডি আর দেখতে মন চায় না।।।।
সালমান মুক্তাদিরও নাটক করে!!! হা হা হা।।।।।।
হেতু-- সে ইউটিউবার সেলিব্রেটি।কিন্তু অভিনয়টার কি হবে??
জাকি লাভকেও নাটকে দেখা যায়।হা হা হা।।।।।। কিছু বলার নাই।
একই রকম প্রেমের নাটক,একই রকম কমেডি নাটক দেখতে দেখতে দর্শক বিরক্ত।
তাই বাংলাদেশী নাটক এখন আর কেউ দেখে না।
গুটিকয়েক ফালতু পরিচালক আর ফালতু অভিনেতাদের জন্য নাটকের বেহাল দোষা।আর ইউটিউবয়ে রিলিজ করা ফালতু নাটকের ফালতু পরিচালকরা তো আছেই।।
অসংখ্য ভালো মানের পরিচালক আছে যাদের নাটকগুলো সবসময়ের জন্য ভালো হয়ে থাকে।
আমার পছন্দের কয়েকজন পরিচালক নাম--
মিজানুর রহমান আরিয়ান, শিহাব শাহিন,মোস্তফা সারয়ার ফারুকী,মাহফুজ,অনিমেষ আইচ, আলভী আহমেদ,ইফতেখার আহমেদ ফাওমি,রেদওয়ান রনি,আশফাক নিপুন,আদনান আল রাজিব।
এদের নাটকগুলো অনেক ভালো লাগে।এদের দ্বারা নাটকের সুদিন ফিরবে আশা করা যায়।
এবার ঈদে--
আয়নাবাজি অরিজিনাল সিরিজের নাটক ও ছবিয়াল রি-ইউনিয়নের নাটকগুলো যথেষ্ট ভালো ছিল।এই নাটকগুলো দেখেই আমার ভেতরে আশার সঞ্চয় হয়েছে।
"বিকাল বেলার পাখি" নাটক দেখে আমি সত্যই কেঁদে দিয়েছি।
নাটকের প্রতিটা সিকুয়েন্স আপন মনে হচ্ছিলো।
'একটা কুলাঙ্গার জন্ম দিছি' এমন একটা ডায়লগ যা প্রতিটা মধ্যবৃত্ত পরিবারে নিজের আপন, খুব পরিচিত।
নাটকের লাস্ট সিকুয়েন্সে যখন বলে---
"সন্তানের কাছে পৃথিবীর সবচেয়ে দুঃসহ দৃশ্যের নাম পিতার পরাজিত মুখ।এই মুখ তাকে বিধ্বস্ত করে দেয়,ধ্বংস করে দেয়,
জীবনের সব আয়োজন সব ছুটে চলা তখন তুচ্ছ মনে হয়,নগণ্য মনে হয়।সংসার তুচ্ছতার খেলা,ভালনাসাই তার একমাত্র ভেলা।"
"
তখন চোখের জল যেন এমনিতেই গড়িয়ে পরছিল।
আমরা এমন আমাদের গল্প চাই,সমাজের গল্প চাই,
লুতুপুতু চাই না তো।
প্রেমের গল্প চাই।খাঁটি প্রেমের গল্প।
পোলাপানের লুতুপুতু চাই না।
আয়নাবাজি সিরিজিের 'দ্বন্দ্ব সমাস'রাতুল বনাম রাতুল,শেষটা একটু অন্যরকম '
আর ছবিয়াল রি-ইউনিয়ন এর 'বিকাল বেলার পাখি,
নাটকের মত নাটক দেখতে চাই।
এছাড়া মাত্র ২৬ দিন ও ব্যাচ-২৭ এর মত নাটক দেখতে চাই।
এমন নাটকগুলো যখন পেতে শুরু করেছি।
তাই
মন বলছে
বাংলা নাটকের-
দিন
মন্দ হতে ভালোর পথে যাত্রা শুরু করেছে।>>>>>>>>>>>