ব্যাকগ্রাউন্ড

ফেইসবুকে!

দেশে গুপ্তহত্যা হলে আর খুন-ধর্ষণ বাড়লে লাভ কাদের?
IMAGES


দেশে গুপ্তহত্যা হলে আর খুন-ধর্ষণ বাড়লে লাভ কাদের?
সাইয়িদ রফিকুল হক

সাম্প্রতিককালে দেশে গুপ্তহত্যা বেড়ে গেছে। একটি চিহ্নিতগোষ্ঠী এই পরিকল্পিত-গুপ্তহত্যায় মেতে উঠেছে। আর এই নিয়ে দেশের অপর একটি গোষ্ঠী সস্তা-লেখালেখি আর অপপ্রচারের মাধ্যমে রাষ্ট্রকে অকার্যকর করার হীনপ্রচেষ্টায় অপতৎপরতা চালাচ্ছে। কিন্তু আমাদের একটুখানি ভেবে দেখতে হবে: দেশের ভিতরে সংঘটিত এইসব গুপ্তহত্যায় এবং এভাবে আরও গুপ্তহত্যা চলতে থাকলে লাভ কাদের? আর কারা হবে এই নারকীয় গুপ্তহত্যা-অপরাজনীতির বেনিফিশিয়ারি? তারা কারা?

বর্তমানে দেশে স্বাধীনতার সপক্ষশক্তি রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত। আর তারা ২০০৮ সালের ২৯-এ ডিসেম্বরের ঐতিহাসিক নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়। এরপর ২০১৪ সালের নির্বাচনেও তারা জয়লাভ করে। আর পরাজয়ের আশংকায় বিএনপি-জামায়াতের বিশদলীয়-বিষদলীয় জোট এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতেই সাহস পায়নি। নির্বাচন না করে তারা ১৯৭৫ সালের মতো অবৈধভাবে ও পিছনের দরজা দিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতাদখল করার জন্য ২০১৪ সালের ৫ই জানুআরির নির্বাচনের কয়েকদিন আগে থেকে দেশব্যাপী নারকীয় আগুনসন্ত্রাস তথা পেট্রোল-বোমার তাণ্ডবলীলা চালাতে থাকে। এর আগে ২০০১ সালের পহেলা অক্টোবরের নির্বাচনে চারদলীয় জোট ভোটের ফলাফল পাল্টে দিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতাদখল করেছিলো, আর তালেবানীশাসন কায়েম করে বাংলাদেশরাষ্ট্রকে ‘নয়া-পাকিস্তান’ বানানোর ষড়যন্ত্রে মেতে ওঠে। সেই থেকে অদ্যাবধি তারা আবার বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতাদখল করার জন্য মরীয়া হয়ে উঠেছে।

২০১০ সালে, বাংলাদেশে স্বাধীনতার প্রায় ৪২ বছর পরে পুনরায় একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকার্যক্রম শুরু হয়, এবং বর্তমানে তা চলছে, এবং এতে দেশের শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ডকার্যকর করা হয়। আর বাংলাদেশে সমস্ত নাশকতার সূত্রপাত তখনই। এরা একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করার জন্য সর্বদলীয়-রাজাকারদের সমন্বয়ে গুপ্তসন্ত্রাস পরিচালনা করতে থাকে। আজকের গুপ্তহত্যা তারই ধারাবাহিকতা মাত্র।

এবার আসুন, আমরা দেখি দেশে গুপ্তহত্যা হলে আর খুন-ধর্ষণ বাড়লে লাভ কাদের?

১. এতে ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগসরকারের ভাবমূর্তি-ক্ষুণ্ণ হলে বিএনপি’র সস্তা-জনপ্রিয়তাবৃদ্ধির আশংকা। পতিত-বিএনপি’র এভাবে হয়তো আবার রাজনীতিতে ফিরে আসা সম্ভবপর হতে পারে।
২. এভাবে নাশকতা ও গুপ্তহত্যা চালিয়ে আওয়ামীলীগসরকারের ভাবমূর্তি-ক্ষুণ্ণ করতে পারলে ২০০১ সালের পহেলা অক্টোবরের নির্বাচনের মতো একটা ব্যবস্থা করে আবার রাষ্ট্রক্ষমতাদখল করতে পারবে বিএনপি ও তার চিরদোসর জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান!
৩. দেশে ক্রমাগত গুপ্তহত্যা আর খুন-ধর্ষণ বাড়লে বর্তমান আওয়ামীলীগসরকারের বদনাম হলে বিএনপি-জামায়াত-জোটের লাভ।
৪. যারা বর্তমানে দেশে অপরাজনীতি চালিয়ে কোনোপ্রকার সুবিধা করতে পারছে না—তারা চাইছে, আওয়ামীলীগসরকারের পতন হোক। এরা এখন একদলীয়-একজাতীয় অপশক্তি।
৫. চীনপন্থী-প্রাক্তন-সৈনিকরাও এখন মুক্তিযুদ্ধবিরোধীঅপশক্তির সঙ্গে সখ্যতা গড়ে যেকোনোভাবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতাদখল করে তার অংশীদার হতে চাইছে। আর এদের অনেকেরই গুপ্তহত্যার বিরাট অভিজ্ঞতা রয়েছে। এরা এখন লাভের রাজনীতি করছে। বিষয়টি আজ ভেবে দেখবার মতো।

কোনো সরকারই দেশে গুপ্তহত্যা চায় না। আর কে চায় নিজে বদনামের ভাগী হতে? এতে লাভ কাদের? এতে একমাত্র লাভ—বিরোধী রাজনৈতিক অপশক্তি বিএনপি-জামায়াত-জোটের।
সাধারণ কোনো মাথা থেকে দেশের ভিতরে এই পরিকল্পিত ‘গুপ্তহত্যা ও খুন-ধর্ষণে’র দুর্বুদ্ধি আসেনি। মোশাদের মতো সংঘবদ্ধ-অপরাধীচক্রের এতে যোগসাজশ রয়েছে বলেই অনুমিত হয়।

পরিশেষে, দেশে গুপ্তহত্যা হলে আর খুন-ধর্ষণ বাড়লে যাদের লাভ—তারাই এইসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। একাত্তরের পরাজিতশক্তি বাংলাদেশরাষ্ট্রকে ছলে-বলে-কলে-কৌশলে বিশ্বের বুকে অকার্যকর প্রমাণ করতে চাইছে। এই অপশক্তিকে রুখে দিতে আমাদের আবার জেগে উঠতে হবে একাত্তরের চেতনায়।




সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।

ছবি
সেকশনঃ রাজনৈতিক
লিখেছেনঃ সাইয়িদ রফিকুল হক তারিখঃ 18/05/2017
সর্বমোট 6507 বার পঠিত
ফেসবুকের মাধ্যমে কমেন্ট করুণ

সার্চ

সর্বোচ্চ মন্তব্যকৃত

এই তালিকায় একজন লেখকের সর্বোচ্চ ২ টি ও গত ৩ মাসের লেখা দেখানো হয়েছে। সব সময়ের সেরাগুলো দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন

সর্বোচ্চ পঠিত

এই তালিকায় একজন লেখকের সর্বোচ্চ ২ টি ও গত ৩ মাসের লেখা দেখানো হয়েছে। সব সময়ের সেরাগুলো দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন